রোগ মুক্তির দোয়া সম্পর্কে জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আজকে আমরা রোগ মুক্তির দোয়া সম্পর্কে  আলোচনা করব। আপনার মনে যদি রোগ মুক্তির দোয়া সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন  থাকে তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি রোগ মুক্তির দোয়া বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
রোগ মুক্তির দোয়া সম্পর্কে জেনে নিন
সর্ব প্রয়োজনে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআন নাযিল করেছেন মানবজাতির কল্যাণে । এমন কিছুই হবে না মানুষের জীবনে যা কুরআনে নেই , যা উল্লেখ কুরআনে আসেনি এমন কিছুই ঘটবে না ।

ভূমিকা

মানুষকে আল্লাহ যেমন সুস্থ রাখে , তেমনি রোগবালাইও দেয় । আল্লাহতালা অনেক সময় পরীক্ষা নেওয়ার জন্য মানুষকে রোগ ব্যাধি দিয়ে থাকেন । আল্লাহ দেখেন মানুষ বিপদ-আপদে কতটুকু মনে রাখছে আল্লাহকে । সর্বপ্রথম রোগ হলে আমরা ডাক্তারের কাছে যাই।


যিনি আমাদের রোগ দিয়েছেন সে আল্লাহর কাছে কি আমরা রোগ মুক্তির জন্য সাহায্য চাই? আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই তখনই যখন ডাক্তার আমাদের সাহায্য করতে বা রোগ থেকে মুক্তি করতে পারেনা তখন ।

রোগ থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন আমরা যে দোয়া পড়ব

বিভিন্ন রোগব্যাধির জন্য আমরা আল্লাহর কাছে মুক্তি চাইবো কুরআনে এমন কিছু আয়াত আছে । আল্লাহতালার কাছে রোগ থেকে মুক্তি চাওয়া উচিত আয়তের মাধ্যমে । আল্লাহর বিধানকে জানা রোগ মুক্তির প্রথম শর্ত । আল্লাহকে মানা পাশাপাশি পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হবে আল্লাহর উপর ।

কয়েকটি আয়াত রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভের জন্য নিচে দেওয়া হল

১.সূরা ফাতিহা তেলাওয়াত করা বিসমিল্লাহ সহ ।

আউযুবিল্লাহি মিনাস শায় ত্বা-নির রাজিম । বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম । আলহামদুলিল্লা-হি রব্বিল আলামিন , আর রহমানির রহিম , মা-লি কি ইয়াও মিদ্দিন , ইয়া কানা বুদু ওয়া ইয়া কানাস্তাইন , ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম , সিরাতাল্লাজিনা , আন আমতা আলাইহিম , গায়রিল মাক দুবি আলাইহিম ওয়া লায দোয়াল্লীন ।

২.সূরা তাওবার ১৪ নম্বর আয়াত
ওয়া ইয়াসফি ছুদু-রা কাও মিম মুমিনিনন ।

অর্থঃ এবং মুমিনদের অন্তর সমূহ শান্ত করে দেন 

৩.সূরা ইউনুসের ৫৭ নম্বর আয়াতওয়া শিফাউল লিমা-ফিচ্ছুদু-রি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল-লিল মুমিনিন ।

অর্থঃ এবং অন্তরের রোগের নিরাময় , হেদায়েত , ও রহমত মুসলমানদের জন্য ।

একটি পানি ভর্তি পাত্রে উপরের উল্লেখিত আয়াতগুলো একবার তেলাওয়াত করে পানিটি পান করলে আল্লাহতালা জটিল ও কঠিন রোগ থেকে হেফাজত করবেন বান্দাদের । আমাদেরকে কুরআন আমল করার তাওফিক দান করুন আল্লাহ । আমিন ।

সর্বপ্রকার রোগ থেকে মুক্তির দোয়া

মানুষকে আল্লাহ তা'আলা যেমন সুস্থ রাখেন তেমনি রোগবালাইও দিয়ে থাকেন । আমাদের অনেক সময় পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আল্লাহ আমাদের বিভিন্ন রোগ দিয়ে থাকেন । আমরা যেন আল্লাহকে মনে রাখে কখনোই যেন না ভুলি । আল্লাহকে বিপদ আপদেও কতটুকু মনে রাখছি আল্লাহ এটাও দেখেন । হয়তো রোগ হলে সর্বপ্রথম আমরা ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে থাকি । 

আমাদের যিনি রোগ দিয়েছেন তার কাছে আমরা রোগ মুক্তির জন্য একবার হলেও কি সাহায্য চেয়েছি ? যখন আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই তখনই ডাক্তার আমাদের সাহায্য করতে পারবেন । ডাক্তার ও ছিলা মাত্র, রোগ সারানোর মালিক আল্লাহ । ইবনে আব্বাস রাজিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন , 


যে ব্যক্তি এমন রোগীর সঙ্গে দেখা করবে , যার এখন উপস্থিত হয়নি মরার সময় এবং সাতবার তার নিকট এই দোয়াটি পড়বে । আসআলুল্লাহ হাল আজিম , রাব্বাল আরশিল আজিম , আইয়্যাশফিয়াক । অর্থাৎ আমি মহান আল্লাহর মহা আরশের প্রভুর নিকট তোমার আরোগ্য প্রার্থনা করছি , তাকে সেই রোগ থেকে মুক্তি দান করবেন আল্লাহ । 

আবু দাউদ ৩১০৬ , তিরমিজি ৩০৮৩ , আহাম্মদ ২১৩৮ ,২৩৮৮ ।

কঠিন রোগ বাধি থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া করব

আল্লাহর কাছে সাহায্যের বিকল্প নেই পানঘাতি মহামারী করোনা অমিক্রম সহ সব ধরনের কঠিন বাদি থেকে বাঁচতে । আল্লাহতালা মানুষকে বিভিন্ন মহামারী রোগব্যাধি মুক্তি দিতে পারে । বিভিন্ন মহামারির এই সময়ে অমিক্রম , করুণা ডেঙ্গু রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে নিচের এই দোয়াটি আমরা পড়ব-

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি , ওয়াল জুনুনি , ওয়াল ঝু জামি , ওয়া সাইয়্যিয়িল আসকাম ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি অবশ্যই তোমার কাছে উন্মাদ , ধবল , কুষ্ঠ রোগ এবং কঠিন রোগ ব্যাধি সব ধরনের থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি ।

(আবু দাউদ , রিয়াদুস সালেহীন , নাসাই , মুসনাদে আহমাদ)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে বেহানা প্রনা ও অশ্লীলতা থেকে সতর্ক করেছেন । কারণ রোগ বাধি ও ভাইরাসের আক্রমণ মানুষের উপর নেমে আসে এইসব কারণে । হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন । 

যখন কোন জাতির মধ্যে অশ্লীলতা ও বেহানা পণা ছড়িয়ে পড়বে তখন এমন নতুন রোগব্যাধি তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে যা দেখা যায়নি ইতিপূর্বে কখনো(ইবনে মাযহাব)

সন্তানের রোগ মুক্তির জন্য যে দোয়া করব

মা-বাবার দোয়ার বিকল্প হয় না সন্তানের জন্য । সন্তানের কল্যাণের জন্য দোয়া করা মা-বাবার দায়িত্ব । যেকোন দোয়া করা যায় তাদের কল্যাণের জন্য । পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে সন্তানের জন্য অনেক দোয়া করা যায় । সেগুলোর অনেক বর্ণনা রয়েছে ।
সন্তানের জন্য অনেক কার্যকরী ও তাৎপর্যবহ দোয়া নিম্নে দেওয়া হল-

সন্তান উত্তম হওয়ার দোয়া
সন্তান স ৎ নিষ্ঠাগণ আদর্শ ও উত্তম হওয়ার প্রত্যাশা সব মা-বাবাই থাকে । সন্তানের জন্য মা বাবা দোয়া করা উচিত । পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে-

রাব্বি হাবলি মিনাস সলেহিন (হে আমার প্রতিপালক! আমাকে নেককার সন্তান দান করুন) (সূরা সফফাতঃ আয়াত নাম্বারঃ ১০০)

নিরাপদ জীবিকার দোয়া
মা বাবার সব সময় কামনা সন্তানের উত্তম জীবিকার । সংক্রামুক্ত ও সমৃদ্ধ জীবন জীবিকার দোয়া ।(সূরা ইব্রাহীমের , আয়াতঃ৩৭) পাঠ করতে পারি সন্তানের নিরাপদ জীবিকার জন্য ।

শয়তান থেকে মুক্তির দোয়া
কোন মা বাবারই কামনা নয় সন্তানের অকল্যাণ । তাই সন্তানের অকল্যাণ থেকে দূরে থাকার জন্য প্রত্যেক মা-বাবারে আবশ্যিকভাবে দোয়া করা যায় । বিশেষ করে শয়তানের প্ররোচনা থেকে মানুষের কুদৃষ্টি অনিষ্ট মন্দ থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করা দরকার ।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস( রা,) থেকে বর্ণিত রয়েছে মহানবী(সা,) হাসান হোসাইন(রা,) সব সময় আল্লাহর কাছে এইভাবে প্রার্থনা করতেন ।

দোয়াটি নিম্নে দেওয়া হলঃ-আউযু বিকালিমা তিল্লাহিত তাম্মাতি মেন কুল্লি ওয়া শয়তানিও ওয়া হাম্মাহো ওয়া মিন কুল্লি আই নিন লাম্মা ।

অর্থঃ আমি তোমাদের দুজনার জন্য আল্লাহ পূর্ণাঙ্গ কালেমাগুলোর মাধ্যমে প্রত্যেক শয়তান ও বিষাক্ত প্রাণী থেকে এবং সর্বপ্রকার কুদৃষ্টি ও অনিষ্ঠ থেকে মুক্তি কামনা করছি ।

লেখকের মন্তব্য

কঠিন রোগ ব্যাধি থেকে আমরা আল্লাহতালার কাছে প্রতিনিয়ত দোয়া করব ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url