বেলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নিন

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা বেলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনার মনে যদি বেল বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি বেলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
বেলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নিন
বেল একটি পরিচিত ফল। যা আমাদের চারপাশেই রয়েছে। বেলে অনেক আন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তাছাড়া রয়েছে অনেক পুষ্টি। আমাদের শরীরকে ঠিক রাখতে বেলের কোন জুড়ি নাই। বিশেষ করে রমজান মাসে বেলে শরবতের কোন জুড়ি থাকেনা।

ভূমিকা

বেল পছন্দ করে না এমন লোক কমই আছে। বেল এমন একটি ফল যার উপকারের কোন শেষ নেই। বেল শরীরের এনার্জি বাড়ায় ডায়াবেটিস কমায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে জন্ডিস কমাই। আলসারের ঔষধ হিসেবে বেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই আজকে আমরা নিম্নে বেলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানবো।

বেলের উপকারিতা

বেল একটি পরিচিত ফল বেলের উপকারিতা অনেক। গ্রীষ্মের সময় সাধারণত এই ফলটি পাওয়া যায়। বেল পেট পরিষ্কার করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের মহা ঔষধ। বেল আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে থাকে নিয়মিত রোজ টানা তিন মাস বেল খেয়ে যান। এছাড়াও বেল ডায়রিয়া কমাতে সাহায্য করে। পাকা বেলের আসে থাকে ফাইবার যা আলসার উপশমে সাহায্য করে।

তাছাড়া বেলের পাতা সারারাত ভিজে রেখে পরের দিন সকালে সেই পানি পান করলে আলসার কমে যায়। এটি ডায়াবেটিস ও কমায়। পাকা বেলে আছে মেথানল নামে একটি উপাদান যা ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে শরবত করে নয় এমনিতেই খেতে হবে। রক্ষা কমায় পাকা বেলে। আর্থারাইটিস উপশম করে ব্যথা দূর করে।


বেলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি আছে যা আমাদের দাঁতের জন্য খুবই উপকারী। তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভিটামিন সি এর কোন জুড়ি নাই। ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করে বেল। আভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য ধরে রাখতে সাহায্য করবেন বেল। বার্ধক্য কমায় বেল। অনেকেই হয়তো জানে না বেলে ম্যালেরিয়া কমায়। রক্ত শুদ্ধ করে বেল। শুধু রক্ত নয় লিভার ও কিডনির কাজও করে।

বেলের অপকারিতা

বেলের যেমন উপকারিতা আছে তেমনি বেলের অপকারিতা আছে। অতিরিক্ত পাকা বেল খাওয়া ঠিক নয়। অনেক দিন যাবত বেল খেলে স্বাস্থ্যের জন্য বয়ে আনে মারাত্মক ক্ষতি। অতিরিক্ত পাকা বেল খেলে অস্ত্রের ছিদ্র হতে পারে। পাকা বেলে অতিরিক্ত পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে যা মানুষের শরীরের জন্য প্রচন্ড ক্ষতিকর। প্রতি ১০০ গ্রামে ৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে।

তবে বেলের উপকারিতার চেয়ে অপকারিতা অনেক কম। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কোন জিনিসই বেশি খাওয়া ঠিক নয়। পেটে দুর্গন্ধ বায়ু তৈরি করে পাকা বেল।

বেলের শরবত

ওজন কমাতে বিলের শরবতের কোন জুড়ি নেই। বেল পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি ফল। আপনাকে প্রশান্তি এনে দিতে পারে অত্যন্ত গরমে ঠান্ডা এক গ্লাস বেলের শরবত। যদি আমরা প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস বিলের শরবত পান করি তাহলে আমাদের শরীরকে পুষ্টির পাশাপাশি চাঙ্গা করে তুলবে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেলেরাস অত্যন্ত উপকারী।

হৃদ রোগীদের জন্য ও উপকারী। পুষ্টিবিজ্ঞানী তথ্য অনুযায়ী বেলে রয়েছে কেরোটিন প্রোটিন রিবোফ্লাভিন এবং ভিটামিন সি। বেল যেহেতু একটি মিষ্টি ফল তাই বেদের শরবতে চিনি যুক্ত না করে লবণ মরিচ গুঁড়া পুদিনা পাতা ইত্যাদি দিয়ে বেলের চাটনি তৈরি করে খাওয়া যায়। খেতে খুবই মজা লাগে। ব্যায়ামের পরে বেলের শরবত খাওয়া উপকারী।

বেলে আছে ভোজ্য আস ও লাসকেটিভ উপাদানে ভরা ফল তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। পানি ভিত্তিক শরীরের ওজন কমাতে বেল ভালো কাজ করে। এনার্জি তৈরি করে। বেল বিপাকীয় গতিবদ্ধ একটি ফল যার মধ্যে প্রোটিন ভিটামিন সি ইত্যাদি রয়েছে। যাদের শরীর খুব ক্লান্ত গরমে তাদের জন্য বেলের শরবতের কোন জুড়ি নাই।

বেল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে লিপিড প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বেল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ভূমিকা রাখে। বেল প্রদাহ রোধ একটি ফল। অতিরিক্ত গরমে গ্যাসের সমস্যা হলে বেলের শরবত অত্যন্ত উপকারী। পেট ঠান্ডা রাখবে এবং প্রদাহ রোধ করবে।

বেল খাওয়ার সঠিক নিয়ম

পাকাবেল প্রাণীর সঙ্গে চিনি মিশিয়ে শরবত করে খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ঘি এর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে হার্টের সমস্যা দূর হয়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে বেলের শরবতে। বিজ্ঞানীদের মতে প্রতি ১০০ গ্রাম বেলে শর্করা 18.8 গ্রাম ক্যালসিয়াম ৩৮ মিলিগ্রাম জলীয় অংশ 77.5 গ্রাম আমি ষ ২.৬ গ্রাম চর্বি ০.২ গ্রাম ভিটামিন বি টু ০.০২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি১ ০.০৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ৯ মিলিগ্রাম খাদ্য শক্তি ৮৭ কিলো ক্যালরি। এছাড়াও বাচ্চাদের বিছানায় পেশাব করা ব্রংকাইটিস অ্যাজমা ভালো করতে সাহায্য করে।

বেল পাতা খাওয়ার উপকারিতা

বেলের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি বেল পাতার উপকারিতা সম্পর্কে খুব কম লোকই জানে। বেল পাতার রস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। বেল পাতায় যেসব উপকারিতা রয়েছে তা হলোঃ বেল পাতার রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। কাভি রোগ সারাই। কাভি রোগের জন্য বেল পাতার রস অনেক উপকারী।


কাভি রোগ যে ব্যক্তির শরীরে আছে সে যদি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন বেল পাতার রস পান করে তাহলে এই রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ইনসুলিন ও গ্লুকোজ এর লেবেল নিয়ন্ত্রণ করে বেল পাতার রস। ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে বেল পাতার রস ইনসুলিন ও গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ রাখে।

যাদের শরীরে ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের নিয়মিত বেল পাতার রস পান করা উচিত। অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে সহজে বেঁচে থাকা যায়। বেল পাতার রসে কোলেস্টরেল কমায় শরীরের নানা ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।

বেল পাতা রসের উপকারিতা

বেল পাতার রসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। যৌন শক্তি কমিয়ে ফেলে বেল পাতার রসে। আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে বেল পাতার রস খেয়ে যান একটানা এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। জনশক্তি কমে গেলে ফিরিয়ে আনতে অনেক দেরি হবে।

অতিরিক্ত বেল পাতার রস খেলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে বিভিন্ন ধরনের রোগ। তাই অতিরিক্ত বেল পাতা রস খাওয়া থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

এই পর্যন্তই আজ শেষ। বেল সম্পর্কে আমরা অনেক কিছুই লিখেছি। বেলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা  বেল পাতার রসের উপকারিতা ও অপকারিতা । দেহকে রোগমুক্ত রাখতে এবং সুস্থ সবল রাখতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় এক গ্লাস পাকা বেলের শরবত রাখা খুবই জরুরী। এক গ্লাস পাকা বেলের শরবত অতুলনীয়।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url