গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলেছে ওমিপ্রাজল জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা কেমন আছেন। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে আজকের এই পোস্টে গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলেছে ওমিপ্রাজল এই সম্পর্কে। আপনি যদি এই পোস্টটি পড়েন তাহলে গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলেছে ওমিপ্রাজল জানতে পারবেন ।
গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলেছে ওমিপ্রাজল জেনে নিন

ওমিপ্রাজল (ইংরেজি:Omeprazole) হল প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর যা পাকস্থলীর অ্যাসিড নিঃসরণকে নিবৃত করে এবং এটি পেট্রিক আলসার গ্যাস্ট্রোইসোফ্যাজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ, জলিনজার এলিসন সিনড্রোম এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে নিচের আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়টি সম্পর্কে আলোকপাত করব।

ভূমিকাঃ গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলেছে ওমিপ্রাজল জেনে নিন

রান্নার জন্য ব্যবহৃত বাঙালিদের নৃত্য প্রয়োজনে একটি উপাদান হল হলুদ। হলুদ প্রাচীনকাল থেকে শুধু রান্না নয়, বরং বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতো। এবার বিজ্ঞানীরা হলুদের আরও একটি বিশেষ গুণ খুঁজে পেয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, বদহজমের ও গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে হলুদ। দ্য গার্ডিয়ান এক ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদন থেকে এর তথ্য জানা গেছে। তাই আমরা গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলছে ওমিপ্রাজল এই সম্পর্কে নিচের আলোচনা থেকে আরও ভালোভাবে জানতে পারবো।

গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদের ব্যবহার

বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞান বি এম জে এভিডেন্স-বেজড মেডিসিনে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, বদহজম ও গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় ওমিপ্রাজল হিসেবে কাজ করতে পারে হলুদ। এই উপাদানটি পাকস্থলীতে সৃষ্টি অতিরিক্ত এসিড কমিয়ে আপনার বদহজম উপাসন করতে পারে। সেখানে আরো বলা হয়েছে হলুদে প্রাকৃতিকভাবে কার্কিউমিন নামে একটি উপাদান থাকে। যা সাধারণভাবে বিভিন্ন স্থানে জলন বা প্রদাহ এবং জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে থাকে। 

এখানে আরো উল্লেখ করা হয়েছে হলুদকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বদহজমের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে এতদিন থেকে নিশ্চিত ছিল না হলুদ কিভাবে বদহজমের কাজ করে থাকে। থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গবেষণার মাধ্যমে হলুদ কিভাবে হজমের কাজ করে সে রহস্যের সমাধান হয়েছে। এই গবেষণার জন্য ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সী ২০৬ জন ব্যক্তিকে না হয় যাদের সবাই বিভিন্ন পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন। 

তাদের সবাইকে তিনটি দলে বিভক্ত করে ২৮ দিন পর্যন্ত তাদেরকে তিনটি পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই তিনটি পদ্ধতি হলো হলুদ সরাসরি ব্যবহার করে(প্রতিদিন ৪ বেলা দুটি করে কার্কিউমিন ২৫০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল) এবং ডামি ক্যাপসুল,, এবং অন্য পদ্ধতিতে ওমিপ্রাজল ২০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুলের সঙ্গে দুটি ডামি ক্যাপসুল দিনে চার বেলা, এবং একটি ওমিপ্রাজল সরাসরি হলুদের সঙ্গে। সাধারণত ওমিপ্রাজল হলো একটি প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর। 

ওমিপ্রজিল ডিসপেপসিয়া বা বদহজম সারাতে ব্যবহার করা হয়। তবে একটি গবেষণায় দেখা গেছে ওমিপ্রাজল অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে পাকস্থলীর ক্যালসিয়াম শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় ফলে মানুষের অস্থি ভাঙ্গায় ঝুঁকি বাড়ে। ফলে মানুষের বিভিন্ন সংক্রমক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যাইহোক গবেষণার নমুনা হিসেবে যে ব্যক্তিদের উপর তিনটি পদ্ধতির পরীক্ষা ২৮ দিন চালানো পর এবং 

পরে আরো ৫৬দিন পরে গবেষকরা দেখতে পান হলুদ বা কার্কিউমিন গ্রহণ করা ওমিপ্রাজল ব্যবহারের চেয়ে অনেক নিরাপদ। সে ক্ষেত্রে ওমিপ্রাজল ব্যবহারকারী রোগীদের মতই কার্কিউমিন বা হলুদ ব্যবহারকারী ব্যক্তিরাও সুস্থতা লাভ করেছিলেন। গবেষকরা গবেষণার সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে বলেছেন, 

এই পরীক্ষার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদের ব্যবহারে ইতিবাচক ফলাফল মিলেছে। তাই তারা বলেছেন আমাদের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদী হয়তো গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় কার্কিউমিন বা হলুদ ক্লিনিক্যাল ব্যবহারের বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

গ্যাস্ট্রিকের ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

আমাদের সবার মধ্যে একটি প্রবণতা আছে পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলেই আমরা গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। দীর্ঘমেয়াদি গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়ার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অবশ্যই আছে। গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ দীর্ঘমেয়াদি খাওয়ার ফলে টাইফয়েডের মত কিছু সংক্রমণ হতে পারে। 

আবার রক্তশূন্যতা ও হার ক্ষয় রোগও হতে পারে। তাছাড়া কিডনি রোগীদের এন্ট্রাসিড জাতীয় ঔষধে মারাত্মকভাবে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য কিডনি রোগীদের এন্টাসিড জাতীয় ঔষধ থেকে দূরে থাকাই ভালো। এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে দূরে থাকার জন্য গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলেছে ওমিপ্রাজল এই প্রবাদ বাক্যটি মনে রাখতে হবে।

ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে করণীয়

যেকোনো ঔষধের কাজ করার পাশাপাশি তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। একটি মেডিসিন যতটুকু কাজ করার কথা তার চেয়ে বেশি কাজ করলেই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এই প্রভাবটা ছোট থেকে বড় গুরুতর এমনকি প্রাণঘাতী ও হতে পারে। তাই ক্ষতি হওয়ার আগেই আসুন জেনে নিই এর থেকে কিভাবে নিরাপদ থাকা যায় এবং ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে করণীয় কি।
  • অবাঞ্ছিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সকল ধরনের ঔষধে সৃষ্টি করতে পারে। এসবের মধ্যে রয়েছে প্রেসক্রিপশন ড্রাগ, সাপ্লিমেন্ট(হারবাল এবং ভিটামিন) এবং ওভার দা কাউন্টার ড্রাগ।
  • আপনি যে ঔষধ সেবন করছেন সেটার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে যদি আপনি চিন্তিত হন। তাহলে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
  • একের অধিক ঔষধের সক্রিয় উপাদানের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ করতে পারে। তাই একই সময়ে একাধিক ঔষধ সেবন করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আপনি হালকা কোন সমস্যার জন্য যে সকল মেডিসিন গ্রহণ করছেন সে সম্পর্কে আপনার পার্শ্ববর্তী ডাক্তার কে জানিয়ে রাখুন।
সাধারণ অ্যাসপিরিন, প্যারাসিটামল, থেকে শুরু করে এন্টিবায়োটিক যেকোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে অনেকগুলো আমরা বুঝতে পারি কম, আবার আমাদের চোখে পড়ে বেশি। তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমনই হোক না কেন এটা নিয়ে আমাদের সতর্ক হওয়া এবং চিকিৎসকের সাথে কথা বলা উচিত। ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কখনো ভালো হয় আবার কখনো বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

বেশিরভাগ সময় লক্ষ্য করা যায় আমাদের শরীরে নেতিবাচক প্রভাব হিসাবে পেটের গোলযোগ, মাথাব্যাথাও ঘোরানো, ত্বকের চুলকানি ইত্যাদি দেখা দেয়। তবে সকল ক্ষেত্রেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করার ফলে এই সমস্যাগুলি থেকে খুব সহজে দূরে থাকা যায়।

গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়ার নিয়ম

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়ার নিয়ম। ওমিপ্রাজল দিনে দুই বেলা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয় বলে সকালে এক ডোজ ও রাতে এক গজ সেবনের কথা বলা হয়ে থাকে। সাধারণভাবে আস্ত ট্যাবলেট অথবা ক্যাপসুলটি পানি দিয়ে গিলে খেতে হয়। এই ঔষধ খাওয়ার ফলে পেটে কোনরকম অস্বস্তির সৃষ্টি হয় না। তাই এই ঔষধ খাবার আগে এবং খাবার পরে সেবন করা যায়।

গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ বেশি খেলে কি হয়

আমরা সাধারণত পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে ঔষধ সেবন করে থাকি। এক্ষেত্রে আমাদের জেনে থাকা দরকার গ্যাস্টিকের ঔষধ বেশি খেলে কি হয়। দীর্ঘদিন ধরে আপনি যদি গ্যাস্টিকের সেবন করে থাকেন তাহলে CKD বা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের ঝুঁকি বহুগুনে বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে, এমনকি গবেষণা দেখা গিয়েছে PPI দীর্ঘদিন সেবনের ফলে কিডনিতে পাথর এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে একিউট ইন্টারস্টিশিয়াল নেফ্রাইটিস (কিডনির ভেতরের অংশ ফুলে যাওয়া) এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

সব শেষ আলোচনায় আমরা বলতে পারি গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলেছে ওমিপ্রাজলগবেষণার মাধ্যমে এ কথা প্রমাণিত। গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর ব্যবহারের চেয়ে হলুদ ব্যবহার অনেক গুণে ভালো। তাই আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহারে মিলেছে ওমিপ্রাজল এ সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি। এই পোস্ট সম্পর্কে আপনাদের যদি কোন মতামত থেকে থাকে অবশ্যই কমেন্টে আমাকে জানাবেন।













এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url