আমের উপকারিতা ও অপকারিতা - আম খেলে কি হয় তা জেনে নিন

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আম নিয়ে বিশদ আলোচনা করব। আমে থাকা ভিটামিন সি ও ভিটামিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে কাঁচা ও পাকা আমে ভিটামিন বি - ৬ উপস্থিত থাকে । আমের উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক।


কাঁচা ও পাকা আম খেলে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে ও কিছু জটিলতা কমাতে সরাসরি ভূমিকা রাখে। এজন্য আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখার জন্য কাঁচা ও পাকা আম খাওয়া দরকার। আম একটি পুষ্টিকর ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ এবং ভিটামিন রয়েছে।

পোস্ট সূচিপত্র - আমের উপকারিতা ও অপকারিতা । আম খেলে কি হয় তা জেনে নিন

ভূমিকা- আমের উপকারিতা ও অপকারিতা - আম খেলে কি হয় তা জেনে নিন

প্রিয় পাঠক স্বাগত জানাচ্ছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে ‘‘আমের উপকারিতা ও অপকারিতা অর্থাৎ আম খেলে কি হয় ”। এই পোস্টটি সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । আমের মৌসুমে গাছে এবং বাজারে বাহারি স্বাদের বেশ কয়েক জাতের আম পাওয়া যায় । যেমন আঁশ যুক্ত আবার আঁশবিহীন আম পাওয়া যায় এই মৌসুমে। আঁশবিহীন আম রসে ভরা থাকে।

এজন্য ফলের রাজা আম। বাচ্চাদেরকে আম খাওয়ালে অনেকে আবার মনে করেন কোন সমস্যা হয় কিনা। কিন্তু অনেকেই ভাবেন আম খাওয়ার আগে আমের উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে হবে । এর অবশ্য যথেষ্ট কারণও আছে। আম অতিরিক্ত মিষ্টি হওয়ায় অনেকে মনে করেন চিনির ক্ষতিকর দিকগুলো আম খেলে হয় কিনা।

পাকা আমের উপকারিতা

পাকা আমে থাকা ভিটামিন সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট মানব দেহের সকল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সরাসরি সহায়ক ভূমিকা রাখে । ভিটামিন বি - ৬ সাধারণত পাকা ও কাঁচা আমে পাওয়া যায়। ভিটামিন বি -৬ মানুষের মস্তিস্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে ও মানব দেহের কিছু জটিলতা কমাতে সরাসরি ভূমিকা রাখে। সরাসরি ভূমিকা রাখে । মুখরোচক ফলের মধ্যে অন্যতম ফল আম। কাঁচা কিংবা পাকা , আমপ্রেমীদের কাছে প্রিয় একটি ফল আম।

পাকা আমের রয়েছে প্রচুর ভিটামিন , খনিজ লবণ, আঁশ ইত্যাদি যা আমাদের বা মানব দেহের জন্য অনেক উপকারি । পাকা আমে আয়রন,ফসফরাস, ভিটামিন সি রিভোফ্লাভিন এবং থায়ামিন থাকে । পাকা আমের ক্যারোটিনের মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে । একটি পাকা আমে থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে এবং হার্ট সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

এছাড়া আমে থাকা ক্যালসিয়াম মানব দেহের হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে থাকে । পাকা আমের থাকা এঞ্জাইনগুলো প্রোটিন উৎপাদন গুলোকে সহজে ভেঙে ফেলতে পারে। এতে খাবার হজম হয় দ্রুত, পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পাকা আমে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় কুষ্ঠ কাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে পাকা আম। আমে থাকা উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে ত্বরান্বিত করে, এবং ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করে দেয়। পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন এর উপস্থিতি রয়েছে এ সুমিষ্ট এই ফলটিতে। যা ড্রাই আই প্রবলেম কমাতেও বেশ কার্যকারী।

কাঁচা আমের অপকারিতা ওপুষ্টিকর

পুষ্টিকর ফলটি ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর ।এর ফলে সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে । তবে আপনি কি জানেন যে আপনার প্রিয় ফলের কিছু নীরব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।


আম খেতে ভালোবাসেন এমন বেশিরভাগ মানুষের কাছে একথা হতাশা জনক শোনাতে পারে, তবে মিষ্টি ও পুষ্টিকর এই ফল সঠিকভাবে খাওয়া না হলে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। আম খেলে বাড়তে পারে এলার্জি। কারণ আম এলার্জিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

বিশেষ করে আমে প্রোটিন ল্যাটেক্সের মতো উপাদান রয়েছে যা এলার্জি আছে এমন কারো জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে। মিষ্টি এবং সুস্বাদু এই ফলে উচ্চ প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে  দ্রুত চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে শরীরে। সুতরাং আম খাওয়ার সময় আপনাকে এর পরিমাণ এর দিকে লক্ষ্য রেখে খেতে হবে।

কাঁচা আম খাওয়ার নিয়ম

কাঁচা আম খেয়ে অনেকেই সঙ্গে সঙ্গে পানি পান করেন। পাক আমের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। আমের উপাদান হজম হয়ে শরীরে মিশতে সময় লাগে। আম খাওয়ার আধাঘন্টা আগেই পানি পান করে নেন। আম খাওয়ার পর পানি পান করলে পেটে ভয়াবহ এসিড হতে পারে। গ্রীষ্ম মানে ফলের রাজা আমের আগমন। আর ফলের রাজার সুমিষ্ট রসে মুখ রঙ্গিন করার জন্য উদগীব হয়ে থাকেন সবাই। ইতিমধ্যে বাজারে কাঁচা আম চলে এসেছে।

পাকা আম আসা তো সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে আমের পুষ্টিগুনের পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিক আছে। দই এর সঙ্গে অনেকেই আম মিশিয়ে খান। মূলত ফালু দার মতোই রেসিপি বানিয়ে খাওয়ার একটি চল আছে। তবে এই দুটি খাবার একসঙ্গে খাওয়া ক্ষতিকর। আমি কিছু উপাদান আছে যা দইয়ের সঙ্গে বিক্রিয়া করে হজমের ব্যাঘাত ঘটায় , পাকস্থলীতে গ্যাস সৃষ্টি করে। আবার তাকেও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। গ্রামে এই চল ছিল অনেক ।

কাছ থেকে আম পারার পর বড় বাটিতে করে আম পানিতে ডুবিয়ে রাখা হতো পানিতে । পানিতে ভেসে থাকা আমগুলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগতো। এখন অবশ্য সবাই ফ্রিজে আম রাখেন। কিন্তু এমনটা করবেন না। আম কিনে বা নিজেদের গাছ থেকে পারলেও ভিজিয়ে রাখুন। বিশেষ করে খাওয়ার আগে ভিজিয়ে রাখ। আমে থাকা ফ্যাটিক এসিড শরীরের জন্য হানিকারক। এটি পেটের এসিডের যন্ত্রণা বাড়াতে পারে। তাই আম খাওয়ার ৪-৫ ঘন্টা আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।

রাতে আম খেলে কি হয়

পাকা আমের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপটোফ্যান , যা নিদ্রাকর্ষি রাসায়নিক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া আমে আছে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার ভিটামিন আর মিনারেল, যার শরীরের ইনসুলিন লেভেল বাড়ায়। এই ইনসুলিন অধিক পরিমাণে ট্রিপটোফ্যান মস্তিষ্কে চালনা করে ।

ফলে মস্তিষ্ক ট্রিপটো ফ্যান থেকে অনেক নিউরোট্রান্সমিটার সিনথেসিস হয় , যার ভিতরে সেরোটোনিন অন্যতম। আর মস্তিষ্কে সেরোটোনিনের বেশ কিছু কাজের ভেতরে একটা হল মস্তিষ্ককে শীতল ও শান্ত করা। এর ফলে শরীর ধীরে ধীরে মিশতে থাকে। এক কথায় বলা যায়, আমি অনেক বেশি ট্রিপটোফ্যান থাকায় পর্যাপ্ত সেরেটোনিন তৈরি হচ্ছে যা ঘুমের জন্য জন্য দায়ী একটা নিউরো ট্রাস্ট মিটার।

অপরদিকে আম ভালোবাসে না এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। আর আম যদি হয় পাকা তাহলে তো আর কথাই নেই। ছোট বড় সবার কাছেই এই মৌসুমির ফলটি প্রিয়। তবে সারাদিনের আম খাওয়ার সাথে রাতের আম খাওয়ার মধ্যে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়, আর তা হলো রাতে আম খেলেই কেমন যেনো একটা ঘুম ঘুম ভাব চলে আসে।

পাকা আম খেলে কি হয়

মৌসুমী ফলের মধ্যে মুঘলচক ফলের অন্যতম আম। প্রেমীদের কাছে কাচা কিংবা পাকা মানেই প্রিয় ফল আম। সাধারণত তাদের দিক থেকে কাঁচা আম টক হয় আর পাকা আম মিষ্টি হয়। গরমের ভিতরে এই ফলটি দিয়ে সাধারণত শরবত বানিয়ে খাওয়া হয়। তেমনি মরিচ চিনি লবণ দিয়ে কাঁচা আমের ভর্তা ও লোভনীয় একটি খাবার।

বিশেষ করে সারা বছর আমের স্বাদ নেওয়ার জন্য নানা প্রক্রিয়ায় আমের আচার করে থাকেন। এতে করে আম দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। পাকা আমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল খনিজ লবণ আঁশ এবং ক্যারোটিন। যা আপনার চোখের জন্য খুবই উপকারী। তাই পাকা আম আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি যেমন বাড়ায় এবং এই জ্বর কিংবা সর্দি কাশি থেকেও আপনাকে সুরক্ষিত রাখে।

তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় আম যুক্ত করুন। এতে করে আপনার রক্তচাপ যেমন নিয়ন্ত্রণ থাকবে তেমনি ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে আম শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও পাকা আমের জুড়ি নেই।

শিশুদের আম খাওয়ার উপকারিত

আপনার শিশুর ডায়েটে যুক্ত করার জন্য একটি দারুণ খাবার, যখন আপ থেকে হ্যাঁ দাদা এইতো ভালোই নাম্বার কোথায় পেলেন আপনিনার শিশু কঠিন বা আধা কঠিন খাবার খাওয়া শুরু করে। সেই সময় থেকেই ফল গুলি আপনার শিশুর জন্য সুস্বাদু বিরকল্প তৈরি করতে পারে। আপনার শিশু একই খাবার খেতে খেতে হয়তো বিরক্ত হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে আমের গুণ এবং আপনার শিশুর জন্য তৈরি করতে পারে এমন সব মুখরোচক রেসিপি । তাই আম অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু।

এগুলিতে ভিটামিন এবং খনিজ গুলি ভালোভাবে রয়েছে যা আপনার ক্রমবদ্ধমান শিশুকে পুষ্ট করে। আম প্রাকৃতিক চিনি এবং শর্করার একটি ভালো উৎস যা আপনার বাচ্চাকে সারাদিন শক্তিশালী রাখবে। পাকা আম সাধারণত নরম হয়ে থাকে যার ফলে শিশুরা ভালোভাবে খায় এবং খাওয়ানোর সহজ হয়। ৮ থেকে ১০ মাস শিশুদের বয়স যখন হয়ে থাকে তখন শিশুদের সাথে আমের পরিচয় করে দেওয়ার গড় প্রস্তাবিত বয়স।

পাঠকের মন্তব্য ও শেষ কথা 

গ্রাম বাংলার সু পরিচিত একটি গাছ আমগাছ। আর বাংলাদেশের জাতীয় গাছ কি জানেন? এই আম গাছ। আর মূল্য থাকলে সুস্বাদু সু মিষ্টি ও রসালো ফল আর এই আমকে বলা হয় ফলের রাজা। বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। আম কাঁচা হোক অথবা পাকা যাই হোক, পরিমিত গ্রহণ করলে শরীরে তেমন কোন নেতিবাচক প্রক্রিয়া তৈরি করে না।

আমে প্রচুর খনিজ লবণ এবং বিভিন্ন ভিটামিন থাকে। ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ,ও ভিটামিন বি -৬ রয়েছে আমে । এছাড়া আরো আছে অ্যামাইনো এসিড, পটাশিয়াম ও কপার যে বিশেষ উপাদান গুলো রয়েছে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url