ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আজকে আমরা ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনার মনে যদি ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে রোগ সম্পর্কে কোনো জানার আগ্রহ থাকে তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে জেনে নিন
শরীর নিজে থেকে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা তৈরি হওয়া ইনসুলিন দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেনা শরীরের এমন একটি গুরুতর অবস্থাই হল ডায়াবেটিস। গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় এর ফলে রক্তে শর্করা । শর্করা প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন মানুষের শরীরের কোষগুলিতে ।

ভূমিকা

দিন দিন বাড়ছে বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা । বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫৩৭ মিলিয়ন মানুষ যাদের বয়স ২০-৭৯ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তারা সবাই । ( আইডিএফ ডায়াবেটিস অ্যাট লাস দশম সংস্করণ ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী ) । একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বাংলাদেশসহ বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ । একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ ডায়াবেটিস ।

ডায়াবেটিকস কি

এমন একটি রোগ ডায়াবেটিস যা রোগীদের কখনোই সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না । অবশ্যই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি কিছু চিকিৎসা দিয়ে । শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কত আগের যুগে এই রোগটি । তবে বর্তমানে এই রোগটি ধরা পড়ছে যে কারো মধ্যে । তাদের ভুল খাদ্যাভাস এর প্রধান কারণ । ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায় সুষম খাদ্য গ্রহণ করার মাধ্যমে । 


উপস্থিতির মাত্রা বৃদ্ধি করে যা রক্তে গ্লুকোজ বা চিনি । কোষগুলিতে ইনসুলিন মুক্তির হরমোন হিসাবে কাজ করে এই গ্লুকোজ । শক্তি পেতে পারে যাতে তারা । ইনসুলিনের গুরুত্ব বুঝতে হবে ডায়াবেটিস রোগ বোঝার আগে । একটি হরমোন হলো ইনসুলিন । 

বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে যা শরীরে কার্বোহাইডেট এবং ফ্যাট গুলির । গ্লুকোজ শরীরে প্রবেশ করতে পারেনা ইনসুলিন ছাড়া । রক্তনালীতে জমা হয় এটি । ডায়াবেটিসে আক্রান্ত করে তুলে এটি কোন ব্যক্তিকে ।

ডায়াবেটিস কেন হয়

আমাদের প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয় আমরা যখন খাবার খাই তখন। যে খাবার খাচ্ছি সেটার অতিরিক্ত গ্লুকোজ কমিয়ে দেওয়া ইনসুলিন এর কাজ । উৎপাদন কমে যায় যখন ইনসুলিনের বা উৎপাদন হওয়ার পরও করতে পারে না কাজ শরীরে তখন অতিরিক্ত গ্লুকোজ থাকে । ডায়াবেটিস বলছি সেই অবস্থাকে । সেই অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলা হয় খালি পেটে যখন গ্লুকোজের মাত্রা ৭ এর বেশি থাকে এবং খাওয়ার পরে ১১ এর বেশি থাকে ।

ডায়াবেটিক কত প্রকার

ডায়াবেটিস দুই প্রকারঃ
  • টাইপ-১ ডায়াবেটিস
  • টাইপ-২ ডায়াবেটিস

টাইপ-১ ডায়াবেটিসঃ তরুণদের হয় এটি সাধারণত খুব দ্রুত দেখা দেয় এটি । এখনো জানা যায়নি টাইপ ১ ডায়াবেটিসের কারণ । চিকিৎসকদের মতে টাইপ-২ এর চেয়ে কম দেখা যায় টাইপ-১ ডায়াবেটিস । ছোটবেলা থেকে যাদের ইনসুলিন মাত্রা খুবই কম থাকে বা একদমই থাকে না সাধারণত টাইপ -১ এর রোগী ডায়াবেটিসের । 

একজন মানুষের শরীরে শিশুকাল থেকে ইনসুলিনকম থাকলে টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগী বলা হয় । কৃত্রিমভাবে ইনসুলিন সরবরাহ করা অত্যন্ত প্রয়োজন এরকম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য । টাইপ-১ ডায়াবেটিস এর ঔষধ নেই ইনসুলিন ছাড়া । ইনসুলিন নিয়ে বাঁচতে হবে এদের বাঁচতে হলে ।১৫-৩০ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিস টাইপ-১ হয়ে থাকে তার আগেও হতে পারে কারো । 

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি দক্ষিণ এশিয়াতে । শরীরে ইনসুলিন একদমই থাকে না টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীর । ইনসুলিন বাধ্যতামূলক নিতে হয় যার জন্য এদের । খুব তাড়াতাড়ি শরীরের রক্তের শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে অলম জাতীয় বিষক্রিয়ায় অজ্ঞান হয়ে মৃত্যু হতে পারে রোগীর । 

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে ইনসুলিন পর্যাপ্ত পরিমাণ উৎপন্ন হয় না টাইপ-১ ডায়াবেটিসের রোগীর । বাহিরে থেকে শরীরে ইনসুলিন প্রবেশ করানো হয় এই জন্য তাদের । মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস বলে গ্লুকোজের পরিমাণ গর্ভাবস্থায় বেড়ে গেলে । ভয় পাওয়ার কিছু নেই ডায়াবেটিস হলে । ডায়াবেটিস নিয়ে সুস্থ থাকা সম্ভব নিয়মিত ব্যায়াম করে সময়মতো খাবার গ্রহণ করে । 

বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয় ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের শরীরে । ঘনঘন প্রসাব হাওয়া কাটা বা ক্ষতস্থান সহজে না শুকানো চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি । ডাক্তার দেখানো এবং তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করা দরকার এসব লক্ষণ দেখা দিলে । পরীক্ষা করা উচিত সকল প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ডায়াবেটিস । 

ডায়াবেটিস হওয়ার বেশি ঝুঁকি থাকে যারা পরিশ্রম বা কাইক শ্রম করে না ওজন যাদের বেশি এই সমস্ত মানুষের । বংশগত কারণেও ডায়াবেটিস হয়ে থাকে । ডায়াবেটিস হতে পারে যাদের বাবা-মা ভাই-বোন এদের ডায়াবেটিস আছে আবার রক্তচাপ বেশি থাকলেও তাদের সমস্যা ।


টাইপ-২ ডায়াবেটিসঃ ৩৫-৪০ বছরের পরে দেখা দেয় টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রধানত। টাইপ-২ ডায়াবেটিস হয় তখন যখন অগ্নাশয় থেকে শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী ইনসুলিন তৈরি করতে না পারলে বা উৎপন্ন কম হলে । ইনসুলিন ব্যবহার না করে এ ধরনের ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে বিশেষ পর্যবেক্ষণের সাহায্যে জীবনযাপন স্বাভাবিকভাবে সম্ভব বলে জানা যায় । 

টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী বর্তমানে 90% রয়েছে । টাইপ-২ ডায়াবেটিস বংশগত কারণেও হতে পারে । ব্যায়াম ও ঔষধ গ্রহন করে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব ইনসুলিন ছাড়াও । চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা যায় যেমনঃ Repaglinide , Metformin , Oral Hypoglycemic Agents glipizide etc , ঔষধ গুলি । 

নিয়ম মেনে জীবন যাপন করতে হবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস দেখা দিলে । একটি সুন্দর খাবার তালিকা তৈরি করে নিতে পারেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী । ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার খেলে এবং নিয়ম মেনে চললে । কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না তখন ডায়াবেটিস নিয়ে আপনাকে । 

দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায় নিয়ম মেনে চললে এই রোগ নিয়ে । ডায়াবেটিসের ঔষধ ছাড়াই সুস্থ জীবন যাপন করা যায় নিয়মের মধ্যে থাকা যায় যদি ।

ডায়াবেটিক হলে কি কি সমস্যা হয়

আপনার রক্তনালী গুলোর মারাত্মকভাবে ক্ষতি সাধন করতে পারে দীর্ঘ সময় ধরে রক্ত উচ্চ শর্করার মাত্রা কারণে। আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় অংশগুলোতে রক্ত যেতে পারে না যদি রক্তনালী গুলোর সঠিকভাবে কাজ না করে । কাজ কম করবে স্নায়ু তন্ত্রে । আপনার শরীরের অন্যান্য অংশে একই ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় একটি অংশে রক্তনালী এবং স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে । 


ক্ষতিগ্রস্ত করে রক্তে ক্রমাগত উচ্চ গ্লুকোজের মাত্রা হৃদপিণ্ড রক্তনালী চোখ কিডনি স্নায়ু এবং দাঁত কে ।অন্যান্যদের তুলনায় বেশি থাকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি । নিয়মিত পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ।

ডায়াবেটিক রোগের চিকিৎসা

১.প্রতিদিন এক ঘন্টা হাটুনঃ অনেক কমে গেছে নগর জীবনে আমাদের শারীরিক পরিশ্রম এবং হাটার প্রবণতা । অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে কম্পিউটার বা মোবাইলের কাজে । পিতা মাতার বা পরিবারের সদস্যদের ডায়বেটিস এ আক্রান্ত হলে সন্তানেরও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । 

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই নিয়মিত হাঁটাচলা এবং শারীরিক পরিশ্রম শুরু করতে হবে । অন্তত এক ঘন্টা প্রতিদিন । এছাড়াও খেলাধুলা করতে হবে পাশাপাশি ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে ।

২.পাল্টে দিন জীবনধারাঃ চিকিৎসকরা বলেছেন এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই জীবন যাপনের ধরন পাল্টানো উচিত যাদের পরিবারের বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস আছে । এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে হৃদরোগ যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বেশি উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে যাদের ।

লেখকের মন্তব্য

যাদের ডায়াবেটিস হয়েছে তাদের জীবন যাপনের পরিবর্তন আনা উচিত । তাই আমাদের জানা দরকার ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে কিভাবে উপরের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আমরা তা জানতে পারবো এবং যারা আক্রান্ত হয়নি তাদেরও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে । নিয়ম মেনে সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে , সময়ের খাবার সময় খেতে হবে , যানবাহন ব্যবহার কমিয়ে হাঁটাচলা করতে হবে । ফাস্টফুড এবং তৈলাক্ত খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে ইত্যাদি ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url