সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা জেনে নিন

এই পোস্ট লেখার শুরুতে সবাইকে জানাই অভিনন্দন। প্রিয় পাঠক আপনি কি সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তাহলে আমার আজকের এই পোস্টটি মন দিয়ে পড়ুন। আমার আজকের এই পোস্টে আপনাদের কাছে আলোচনা করব সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত। তো চলুন আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক।
সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা জেনে নিন

সাপে কাটার সঙ্গে আতঙ্ক শব্দটি জড়িয়ে আছে। গ্রামীণ জীবনে সাপে কাটার বিষয়টি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হলেও মে থেকে অক্টোবর মাসে তা বেড়ে যায়। তবে সাপে কাটলে যে বিষক্রিয়া হবে বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। বিশেষ করে অনেকেরই জানা দেশের বিষধর সাপের চেয়ে নির্বিশ সাপের সংখ্যায় বেশি। কিন্তু অপচিকিৎসা ও অজ্ঞতার কারণে মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয় না। তাই আমরা এই পোস্টে জানবো সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা কিভাবে নিতে হয়।

ভূমিকাঃ সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা জেনে নিন

সাপে কামড়ানোর জায়গা বা দংশিত স্থান কিছুতেই কাঁটা ছেড়া করা উচিত নয়। সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি ক্ষতস্থানে শুধুমাত্র ভেজা কাপড় দিয়ে কিংবা জীবাণুনাশক মলম দিয়ে ক্ষতস্থান মুছে দিতে হবে। আক্রান্ত স্থান থেকে মুখের সাহায্যে রক্ত বা বৃষ্টি নিয়ে বের করার চেষ্টা করা বা ক্ষতস্থানে গোবর, সিমের বিচি, আলকাতরা, লালা,ভেষজ ঔষধ বা কোন প্রকার রাসায়নিক লাগানো উচিত নয়।

সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা

আপনি যদি সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আপনাকে এই পোস্টটি ভালোভাবে পড়তে হবে। আমি আশা করছি এই পোস্টটি আপনার খুব উপকারে আসবে। এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা কি।

প্রথমত- প্রথম অবস্থায় রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে। এ সময় রোগী খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। আতঙ্কে থাকার কারণে রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে। তাই রোগীকে বোঝাতে হবে এর কামড়ে আক্রান্তে ভয়ের কিছু নেই বহু মানুষ চিকিৎসায় বেঁচে উঠেছেন, আপনিও নিশ্চিন্তে থাকুন।

দ্বিতীয়ত- সাপে কামড়ানোর পর যত কম নাড়াচাড়া হবে তত কম হারে বেশ সারা শরীরে ছড়াবে। বাঁশের টুকরো বা স্কেল সহ হাতে-পায়ে (যে অংশে কামড়াবে) কাপড় দিয়ে হালকা করে বেঁধে দিতে হবে। হাত বা পা (কামড়ের নিকটতম স্থান) কামড়ানো ব্যক্তি যাতে ভাঁজ করতে যেন না পারে তাই এই ব্যবস্থা করতে হবে।

তৃতীয়ত- সাপে কামড়ানোর পর আপনাকে সর্বপ্রথম নিকটবর্তী যে কোন হাসপাতালে ফোন করে জেনে নিতে হবে A.V.S নিওস্টিগমিন, এ্যাট্রোপিন, এবং অট্রিনালিন ঔষধ আছে কিনা। যে হাসপাতালে ঔষধ আছে সেই হাসপাতালে যেতে হবে। আপনাকে মাথায় রাখতে হবে সাপের কামড়ের সম্পূর্ণ চিকিৎসা একটি ব্লক প্রাইমারি হেলথ সেন্টারেও হতে পারে। তাই রোগীকে সম্ভব হলে বাইকের মাঝে বসিয়ে রোগীর সাথে কথা বলতে বলতে যেতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

চতুর্থ- আপনি হাসপাতালে পৌঁছার পর চিকিৎসককে সাপের চিকিৎসার করার কথা বলুন। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রোগীর কথার মধ্যে কোন অসঙ্গতি যেমন কথা জড়িয়ে আসা, যথাযথভাবে কতক্ষণ আগে শুরু হলো চিকিৎসককে সম্পূর্ণ ভালোভাবে জানাবেন।

সাপে কামড়ানোর লক্ষণ

বিষধর কোন সাপে কাটলে শরীরে বিষক্রিয়ার কিছু লক্ষণ দেখা যায়। সাপে কামড়ানোর লক্ষণ গুলির মধ্যে রয়েছে ,যে স্থানে কামড়ায় সেখানে একটি ক্ষতর সৃষ্টি হয়। ক্ষতস্থানে বিষদাঁতের দুটি দংশনের চিহ্নের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, ক্ষত স্থান থেকে অনবরত রক্তপাত, কামড়ানোর স্থান অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ওঠা এবং প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করা, কখনো কখনো কামড়ানো ব্যক্তির সারা শরীর ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, চোখে ঝাপসা দেখা, খাবার ও ঢোক গিলতে অসুবিধা হওয়া এবং চোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসা ঘুম ঘুম ভাব হওয়া।

বিষহীন সাপের কামড়ের লক্ষণ

কামড়ানোর স্থান থেকে তাজা গারু লাল রক্ত চইয়ে পড়বে। ক্ষতস্থানে কিছুক্ষণের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধবে। ক্ষতস্থানে জ্বালাপোড়া করবে কিন্তু ফুলবে না। তবে কোন যন্ত্র না হবে না জ্বালা আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। সামান্য পরিমাণে রোগী কাপতে পারে। রোগী ঝিমিয়ে পড়া সম্ভব না থাকবে না খিচুনিও আসবে না। রোগীকে সবসময় শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। 

তাকে আপনি বলুন বেশিরভাগ সাপের কামড় বিষহীন সাপের হয়ে থাকে। তাকে বলুন এমন কি বিষধর সাপ ও সবসময় মরণ মাত্রার বিষ শরীরের ঢালে না। তার কাছে বলুন ভয়ের কিছু নাই আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। চিকিৎসা করলে সে সুস্থ হয়ে যাবে। দুর্ঘটনা স্থান থেকে তাকে সরিয়ে দিন এবং কামড়ানোর স্থান নিশ্চিত করুন। যত দ্রুত সম্ভব তাকে হসপিটালে নিয়ে যান।

চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ের লক্ষণ

চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ের ফলে কয়েক মিনিট পরেই জায়গাটি জ্বালাপোড়া শুরু করবে, ব্যাথা শুরু হবে এবং জায়গাটি অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যাবে। এই পোলা এবং লালচে ভাব ক্ষতস্থানের চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে। পরে কামরানোর স্থানটি ফুসকা পড়ার মতো ফুলে যাবে এবং ক্ষতস্থান থেকে দেওরস পড়বে। চামড়া ও তৎসংলগ্ন কোষে গ্যাংগ্রিন হতে পারে।

সাপে কামড়ালে কি করা উচিত নয়

সাপে কামড়ালে কি করা উচিত নয় একথা বলতে গেলে। কামড়ানোর জায়গা দেখে সনাক্ত করে ক্ষতস্থান রক্তাক্ত থাকলে আগে পরিষ্কার করে নিতে হবে। কোন অবস্থাতেই বিষ চুষে বের করার চেষ্টা করা যাবে না। সাপে কামড় দেওয়ার জায়গায় কোন ধরনের ঔষধ বা কেমিক্যাল ব্যবহার করা যাবে না। বরং কামড়ানোর জায়গাটি সাবান বা আয়োডিন দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে পারেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক এই পোস্টটি লেখার শেষে বলতে চাই এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি। এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনি সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনার যদি কোন পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন এবং আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url