পুরুষদের মাথার টাক সারানোর কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি জানুন

আসসালামু আলাইকুম। এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি পুরুষদের মাথার টাক সারানোর কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে। টাক (ইংরেজি : Baldness) বলতে আমরা চুলের অভাবকে বোঝাই, বিশেষ করে মাথার চুলকে বোঝাই। মাথার চুল ক্রমাগত পড়ে হালকা হয়ে যায়। হালকা হওয়ার মাধ্যমে সাধারণত টাক হওয়া প্রকাশ পায়।

সুন্দর চুল মানুষকে সুন্দর করে তুলতে পারে। মাথায় চুল কম থাকার কারনে বা টাক সমস্যা থাকার কারেনে অনেকটাই মানুষকে চরম অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দেয়। টাকের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। পুরুষদের মাথার টাক সারানোর কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে টাক সমস্যা সমাধান যদি করা যেতো তাহলে হয়তো সবার কাছেই সুখবর বলে মনে হতো।

• ভূমিকা
• টাক পড়া রোধ করার উপায়
• টাক মাথায় চুল গজানোর তেলের নাম
• মাথার মাঝখানে টাক
• টাক থেকে মুক্তির উপায়
• টাক পোকা হওয়ার কারণ
• লেখকের মন্তব্য

টাক বলতে আমরা সাধারণত মাথার চুলের অভাবকে বুঝে থাকি। মাথার চুল ক্রমাগত পড়ে যাওয়ার মাধ্যমে হালকা হয়ে যাওয়ার ফলে টাক হওয়া প্রকাশ পায়। পুরুষের ক্ষেত্রে এটি অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া বা “পুরুষের টাক’’ নামে পরিচিত। পুরুষদের মাথার ট্রাক সরানোর কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতি সম্পর্কে আমরা নিচের আলোচনা থেকে জানতে পারবো।

আমাদের সকলকে কোনও না কোন সময় চুল পড়ার সমস্যায় পড়তে হয়। বিভিন্ন সমস্যার কারণে আমাদের চুল পড়ে থাকে যেমন খাদ্যাভাস, স্ট্রেস ইত্যাদি। বেশিরভাগ মানুষই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। দেখা যায় চুল পড়তে পড়তে একসময় মাথায় টাক হয়ে গেছে। তাই টাক পড়া থেকে মুক্তি পেতে এমন কিছু ব্যবহার করতে হবে যা আপনার চুল পড়া কমায় এবং চুল বৃদ্ধি পেতে পারে। টাক পড়া রোধ করার উপায় হিসেবে আমরা কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। 

ভালো একটি হেয়ার অয়েল এর সাহায্যে মাথার ত্বক ও স্ক্যাল্পে মেসেজ করলে রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় এজন্য ভালো একটি হেয়ার অয়েল ব্যবহার করা জরুরী। তাছাড়া নারকেল তেল, আমলকি, ক্যাস্টর অয়েল, পেঁয়াজের রস, লেবু, ডিমের মাস্ক এই উপাদানগুলো চুলের বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করতে পারেন। এই উপাদানগুলো আপনি আলাদা আলাদা ভাবে চুলের গোড়ায় ব্যবহার করতে পারেন। এই উপাদান গুলো ব্যবহারের ফলে আপনার চুল বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।

টাক মাথায় চুল গজানোর তেলের নাম হিসেবে বলা যায়, বাদাম থেকে তৈরি তেল, আমলা তেল, নারকেল থেকে তৈরি তেল, এমনকি জলপাই থেকে তৈরি তেল আপনার চুলের গোড়ায় ভালোভাবে মেসেজ করার ফলে চুল মজবুত করবে। চুলের গোড়ায় তেল মেসেজ করার ফলে আপনি মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন আবার মানসিক চাপ থেকেও মুক্তি পেতে পারেন। নারকেল তেলের সাথে মেথি কয়েক মিনিট ভেজে গুড়ো করে মিশিয়ে নিন। 

মেথি মেশানো তেলটি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন নিয়মিতভাবে মাথায় মেসেজ করুন। নারকেলের দুধ আমাদের মাথার চুল ও মাথার স্ক্যাল্প ভালো রাখতে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য উপযোগী একটি উপাদান। নিয়মিত যদি আপনি নারকেলের দুধ ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনি চুল পড়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন। নারকেলের দুধ বের করার জন্য প্রথমে একটি নারকেল কুরিয়ে নিন তারপর সামান্য পরিমাণ পানি দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন ব্লেন্ড হয়ে গেলে সেটা থেকে দুধ বের করে নিন। 

নারকেল দুধের সাথে ১০ মিলি আমলকি তেল, ২০ মিলি নারিকেল তেল, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস ভালোভাবে মিক্স করে নিন। এই মিক্স করা তেল সপ্তাহে দুই তিন দিন ব্যবহার করুন। যেদিন ব্যবহার করবেন এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে যেমন চুল পড়া কমে যাবে আপনি খুশকি থেকে মুক্তি পাবেন।

মাথার মাঝখানে টাক বংশগত ভাবে হয়ে থাকে। বংশগত টাককে মেডিকেল ভাষায় বলে মেল প্যাটার্ন হেয়ার লস অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের কপালের দুই পাশে আস্তে আস্তে চুল পড়া এবং মাথার মাঝখানে ফাঁকা হয়ে চুল পড়ে মাথা একেবারে খালি হওয়াকে বুঝায়। 

এ ধরনের ট্রাক সাধারণত হয়ে থাকে টেস্টোস্টেরন নামক একটি হরমোন এই হরমোনটি মাথার ত্বকের ওই স্থানগুলোতে ড্রাইহাইড্রো টেস্টোস্টেরনে (ডিএইচটি) পরিণত হয় এবং এডিএ্রইচটি  প্রভাবের কারণে প্রথমে মোটা চুল পরে তারপরে পাতলা চুলগুলো পড়ে যায় এক পর্যায়ে এয়ারফুলিকুল শুকিয়ে গিয়ে সম্পূর্ণ চুল পড়ে মাথা ফাঁকা হয়ে যায়।

আমরা দেখতে পাই কারো কারো চুল বিশেষ যত্ন ছাড়াই অনেক ভালো থাকে সুন্দর থাকে। তবে তার পরিমাণ খুবই কম। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় যত্নের অভাবে চুল রুক্ষ হতে শুরু করে, অনেক সময় চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। আর এই সমস্যা থেকে শুরু হয় টাক হওয়া। এই চুল পড়া বন্ধের জন্য খুব দ্রুত একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। 

কিন্তু দ্রুত কোন চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে না। তাই তখন চিকিৎসকের কাছে দৌড়াতে হয়। তবে খুব সহজ উপায়ে পুরুষদের মাথার টাক সারানোর কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে। এই ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে আপনার মাথার টাক পড়া সমাধান হতে পারে। এই ঘরোয়া উপায় ব্যবহারে আপনার খরচ হবে সামান্যই। চলুন জেনে নেই ঘরোয়া উপায়-

প্রথমে একটি ডিম নিন, ডিমটি ভালোভাবে একটি পাত্রে ফেটে নিন, এর সাথে এক টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল অথবা ক্যাস্টর অয়েলের পরিবর্তে নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। এই দুই উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে একটি মিক্স তৈরি করে নিন। এই মিক্সটি সপ্তাহে দুই-তিন দিন চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। 

মাথার তালুতে ভালোভাবে মেসেজ করুন। লাগানো হয়ে গেলে এ অবস্থাতে আধা ঘন্টা রেখে দিন। তারপর ভালো করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধোয়ার পরে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। টাক থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হিসেবে উপরের আলোচিত এই উপাদানগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

পুরুষদের মাথার টাক সারানোর কিছু ঘরোয়া পদ্ধতির উপায় এর মধ্যে টাক পোকা হওয়ার কারণ অন্যতম। টাক পোকা আসলে এক ধরনের অটো ইমিউন ডিজিস। অর্থাৎ মানুষের শরীরের কোন এক অজ্ঞাত কারণে নিজস্ব ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা মাথার হেয়ার ফলিকদের শত্রু মনে করে থাকে। শত্রু মনে করার কারণে সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে চুল পড়া শুরু হয়ে যায় নতুন চুল গজাতে দেয় না।

Artical এর ভিতরে আমরা আলোচনা করেছি পুরুষদের মাথার টাক সারানোর কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে। টাক সমস্যা নিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক বেশিরভাগ মানুষ ভুগে থাকেন। এই সমস্যা থেকে সমাধানের বিভিন্ন উপায় নিয়ে আমি উপরে আলোচনা করেছি। যদি আলোচনা আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের প্রিয়জনদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। লিখার মধ্যে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।