বাংলাদেশের আইনে তালাক বা ডিভোর্সের নিয়ম জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম ।এই পোষ্টের  মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ আইনের তালাক বা ডিভোর্সের নিয়ম জানানোর চেষ্টা করব। এই বিষয়টি ভালোভাবে জানার জন্য নিচের এই  পোস্টটি ভালোভাবে পড়তে হবে। বাংলাদেশের আইনে তালাক বা ডিভোর্সের কিছু নিয়ম আছে যা আমরা নিচে আলোচনা করতে যাচ্ছি।


স্বামী বা স্ত্রী দুই জন মিলে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে পারেন। তবে স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আইনে তালাক বা ডিভোর্সের  একটি শর্ত রয়েছে। বিয়ে নিবন্ধনের সময় নিকাহনামার আট নম্বর কলামে যদি স্ত্রীকে, বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার দেওয়া থাকে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে স্বামীর জন্য যে প্রক্রিয়া বলা হয়েছে, একই বিধান স্ত্রীর জন্য প্রযোজ্য । 

পোস্ট সূচিপত্র: বাংলাদেশের আইনে তালাক বা ডিভোর্সের নিয়ম জেনে নিন

ভূমিকা- বাংলাদেশের আইনে তালাক বা ডিভোর্সের নিয়ম জেনে নিন

বৈধভাবে চুক্তি করা হচ্ছে বিবাহ। যার মাধ্যমে একজন পুরুষ ও একজন নারী দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। কখনো নিজেদের পছন্দে আবার কখনো পারিবারিক সম্মতিতে বিবাহ হয়ে থাকে। দেশ কাল পাত্র ধর্ম এবং বর্ণভেদে বা কালচার অনুসরণ করে বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা এবংন আনুষঙ্গিকতা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিতে বিবাহ হয়ে থাকে। যা অনেকটা এমন-উটছড়ি, তোর বিবাহ হবে বা বর কনে পছন্দ হলো

কাজী ডাকো নাম ঠিকানা বল কেউ একজন জিজ্ঞেস কর রাজি কিনা এই প্রথার মাধ্যমে বিয়ে হয়। আবার বলা হয় বলো কবুল! হয়ে গেল বিয়ে। তবে কাজী অফিসে গিয়ে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। আবার তালাকের বেলায় সিটি কর্পোরেশন নোটি, ৯০ দিন অপেক্ষা, তালাক কার্যকর এবং তালাক রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। হিন্দু ধর্মের বিবাহের প্রথা ও আচরণগত ভিন্নতা রয়েছে। ছাতনা তলায় বাধা অগ্নিসাক্ষী মন্ত্র পাঠ করে হিন্দু ধর্মের বিবাহ হয়ে থাকে। 


হিন্দু ধর্মে বিবাহ বিচ্ছেদের বা ডিভোর্সের নিয়ম নেই। তবে ভারতের কারণ দেখিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। বৌদ্ধ ধর্মে বিবাহের রীতিনীতি ভিন্নতা থাকলেও বিবাহ মন্দিরে কিংবা অন্য কোথাও বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের মাধ্যমে মন্ত্র পাঠ করে বিবাহ হওয়ার চালু আছে। ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদের বেলায় বিবাহের কারণ দেখিয়ে কোড থেকে তাদের ডিভোর্স বা বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। খ্রিস্টান ধর্মীয় বিবাহের সবচেয়ে সুন্দর রীতি রয়েছে। 

ক্রিস্টানীয় চার্চে তাদের বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বিবাহের আগে থেকেই বর এবং কনের নাম ঠিকানা জানিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়। পরে তাদের চার্চ বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা  শেষ করে। 

বিবাহ মানুষের জীবনে নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিবাহের মাধ্যমে নারী-পুরুষ একত্রে বৈধভাবে বা স্বামী-স্ত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এক জায়গায় বসবাস করতে পারে। ফলে গড়ে তুলে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন। বিশেষ করে সবাই চায় বিবাহিত জীবন সুখের হোক স্বাচ্ছন্দের হোক এবং দুজনে মিলে ভালোভাবে জীবন কাটাতে সফল হোক।

স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

নিকাহনামার ১৮ নাম্বার কলামে বলা আছে বিয়ে নিবন্ধনের সময়, স্ত্রীকে ডিভোর্সের অধিকার দেয়া থাকে তবে স্ত্রীর ডিভোর্স দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে স্বামীর যেমন অধিকার রয়েছে বা প্রক্রিয়া বলা আছে একই বিধান স্ত্রীর জন্য প্রযোজ্য। তবে স্ত্রীকে ডিভোর্সের অধিকার স্ত্রী পারিবারিক আদালতে ডিভোর্সের জন্য বা বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার কিছু নিয়ম আছে যা, স্ত্রীকে স্বামী কিভাবে তালাক দিবে। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার নিয়ম-স্ত্রীকে স্বামী কিভাবে তালাক দিবে আজকে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে রাখা ভালো শুরুতেই, মুখে তালাক বললে তালাক হয়ে যায় না। তাহলে আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে আমরা তালাক কিভাবে দিব? এটার উত্তরে আমরা বলতে পারি, আপনি মুখে তালাকের ঘোষণা করার পাশাপাশি আপনাকে লিখিত নোটিশ পাঠাতে হবে। এখন আপনি বলতে পারেন নোটিশ কোথায় পাঠাবো?  আপনার স্ত্রী যেখানে বসবাস করে সে জায়গাটা 

যদি হয় ইউনিয়ন পরিষদের এরিয়া তাহলে চেয়ারম্যান এর কাছে আর যদি পৌরসভার এরিয়া তারা মেয়র বা প্রশাসকের কাছে নোটিশ পাঠাতে হবে। আপনি চেয়ারম্যান বা মেয়রের ঠিকানায় যে নোটিশ পাঠিয়েছেন, সেই নোটিশের এক কপি আপনার স্ত্রী বর্তমানে যেখানে বসবাস করছেন সে ঠিকানায় পাঠাতে হবে। এখন আপনারা প্রশ্ন করবেন এই নোটিশ পাঠানোর পর কি হবে? চেয়ারম্যান বা মেয়রের কার্যালয়ের ঠিকানায় বা

তাদের কাছে যখন আপনি চিঠি পাঠাবেন বা চেয়ারম্যান বা মেয়র যখন নোটিশটি গ্রহণ করবেন, ঠিক সেদিন থেকে ৯০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলে আপনার তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। এখন প্রশ্ন হল এই ৯০ দিনের মধ্যে কি হবে? চেয়ারম্যান বা মেয়র এই নোটিশটি বুঝে নেওয়ার পরে সেদিন থেকে শুরু করে ৩০ দিনের মধ্যে তারা একটি সালিশি বৈঠক পরিষদে গঠন করবে। এই সালিশি বৈঠকে স্ত্রী তার পক্ষে একজনকে মনোনীত করবেন তার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য এবং

 স্বামী তার পক্ষে একজন মনোনীত করবেন তার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আর চেয়ারম্যান একজনকে এই সালিশি প্রধান হিসেবে মনোনীত করে সালিশি পরিষদ গঠন করবেন। এই সালিশি বৈঠকের প্রধান উদ্দেশ্য হবে স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে সমস্যা আছে সেই সমস্যাগুলো সমাধান করা এবং সমাধান করে তাদেরকে পুনরায় সংসারে ফিরিয়ে দেওয়া। তবে সালিশি পরিষদ যদি তাদের এই উদ্দেশ্যে পালনে ব্যর্থ হয়

বা স্বামী স্ত্রীকে পুনরায় সংসার করানোর জন্য রাজি করতে না পারে তাহলে ৯০ দিন পর বিবাহ বিচ্ছেদ বা ডিভোর্স কার্যকর হয়ে যাবে। আর এ বিশেষ করে এই ৯০ দিন গণনা করা হবে চেয়ারম্যান যেদিন নোটিশ গ্রহণ করেছেন সেদিন থেকে। তবে একটা বিষয় সবাইকে মনে রাখতে হবে। বিবাহ বিচ্ছেদের সময় বা ডিভোর্সের সময় স্ত্রী যদি গর্ভবতী থাকে তাহলে গর্ভপাত না হওয়া পর্যন্ত ডিভোর্স কার্যকরী হবে না। 

এটার উত্তরে বলা যায়, তালাক অবশ্যই হবে। আপনি যেদিন নোটিশ পাঠাবেন সেই নোটিশ চেয়ারম্যান বা মেয়র যেদিন গ্রহণ করবেন সেদিন থেকে ৯০ দিন পর আপনার ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বা মেয়র সালিশি পরিষদ গঠন করুক বা না করুক আপনার ডিভোর্স কিন্তু কার্যকর হবে। এখন আলোচনা করব এই তালাকের নোটিশ আপনি কার দ্বারা তৈরি করবেন এবং কিভাবে পাঠাবেন? 

এ তালাকে নোটিশটি আপনি কিভাবে তৈরি করবেন বা পাঠাবেন তা আইনে সুপষ্ট কিছু বলা নেই। তবে আপনি চাইলে তালাকের নোটিশটি নিজে লিখতে পারেন বা অন্য কাউকে দিয়ে লেখাতে পারেন। অথবা কাজী অফিসে গেলে এই তালাকের নোটিশে অনেক ফরমেট পাওয়া যায় লিখিত ফরমেট আকারে। সে ফরমেটগুলা নিয়ে শূন্যস্থানে আপনার নাম ঠিকানা ভালোভাবে পূরণ করে সেটা আপনার তালাকে নোটিশ হিসেবে পাঠাতে পারেন অথবা 

একজন আইনজীবের মাধ্যমে তালাকের নোটিশ তৈরি করতে পারেন। তালাকের নোটিশ কিভাবে পাঠাবেন? আপনি যদি ইচ্ছা করেন তালাকের নোটিশ আপনি নিজেই নিয়ে গিয়ে আপনার স্ত্রীকে দিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু আমি এটা করতে বলবো না। কারণ আপনি যদি নিজে গিয়ে তালাকের নোটিশ দিয়ে আসেন সেক্ষেত্রে আপনার স্ত্রী যে এই নোটিশ বহন করেছে সেটার প্রমাণ স্বরূপ আপনাকে আপনার স্ত্রীর সই গ্রহণ করতে হবে। 

আর এই পদ্ধতি আপনি যদি গ্রহণ না করেন আপনি এই তালাকের নোটিশ আপনার স্ত্রীকে ডাকযোগের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে পাঠাতে পারেন। যেটাকে আমি মনে করি সবচেয়ে ভালো একটি মাধ্যম তালাকে নোটিশ পাঠানোর জন্য। সবসময় একটা জিনিস গুরুত্ব দিয়ে মনে রাখবেন তালাকে নোটিশ আপনি লিখেন বা কাউকে দিয়ে লেখান বা 

কাজির দ্বারাই লেখান না কেন, নোটিশটি লেখার সময় অবশ্যই ফরমেট ফলো করতে হবে কারণ এই নোটিশের ফরমেট অনুযায়ী লিখতে হবে এবং এখানে যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া দরকার সেগুলো এর মধ্যে অবশ্যই থাকতে হবে। ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশ আপনাকে দিতে হবে আপনি যদি চেয়ারম্যান বা মেয়রের মাধ্যমে এ নোটিশ না দেন তাহলে এটি অপরাধ যোগ্য নিবেদিত হবে।

স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

স্ত্রী কিভাবে তার স্বামীকে তালাক দিবে? তালাকের নিয়ম
আজকে আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব স্ত্রী কিভাবে তার স্বামীকে তালাক দিবে-

একটা জিনিস মনে রাখতে হবে তালাকের ক্ষেত্রে মুসলিম আইন অনুযায়ী স্বামীর ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি ইস্ত্রির তুলনায়। কারণ স্বামী চাইলে কোনোরকম কারণ না দেখিয়ে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে। কিন্তু স্ত্রীর স্বামীকে তালাক দেওয়ার ব্যাপারে এই বিষয়টিতে একটু ভিন্নতা রয়েছে। চলুন আমরা মূল পয়েন্টে ফিরে আসি স্ত্রী কিভাবে তার স্বামীকে তালাক দিবে, আর যদি সহজভাবে বলি স্ত্রীর তার স্বামীকে তিন ভাবে তালাক দিতে পারে।

  • প্রথমটি হল বিয়ের কাবিন নামার ১৮ নাম্বার কলামে যদি স্ত্রীকে যদি তালাক দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়,  স্ত্রী তার স্বামীকে সেই আইন অনুযায়ী তালাক দিতে পারবে। 
  • দ্বিতীয় পদ্ধতি হল খোলাতালাক- কাবিননামার ১৮ নাম্বার কলামে যদি এই ক্ষমতা স্ত্রীকে দেওয়া না থাকে সেক্ষেত্রে স্ত্রী তার স্বামীকে খোলাতালাক দিতে পারে। স্ত্রী স্বামীকে নিজ থেকে প্রস্তাব দিবে তাকে যেন তালাক দেয়, বিনিময়ে স্ত্রীর তার স্বামীর কাছ থেকে দেনমোহরের টাকা নেবে না বা অন্য কোন কিছুর বিনিময় খোলাতালাক দেওয়া যায়। এই তালাকটি সমঝোতার মাধ্যমে হয়ে থাকে।
  • আর দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো আদালতের মাধ্যমে তালাক- স্ত্রী ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করতে পারে । ওপরের ইতিমধ্যে যে তিনটি পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, এই পদতিগুলো অনুসরণ করে স্ত্রী যদি তার স্বামীকে তালাক দিতে চায় প্রক্রিয়াটি কি হবে? সেটা নিয়ে নিচে এখন আলোচনা করব।

প্রথম পদ্ধতি ছিল কাবিন নাম্বার ১৮ নাম্বার কলাম- ইতিমধ্যে উপরে এই বিষয়ে বলেছি এই ক্ষমতাটি কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামে দেয়া হয়েছে। স্ত্রী এই ক্ষমতা বলে তার স্বামীকে তালাক দিতে পারে। স্ত্রী যদি কাবিননামার ১৮ নাম্বার কলাম অনুসরণ করে স্বামীকে তালাক দিতে চায়, সে ক্ষেত্রে সে তালাক দিতে পারবে। তবে তাকে প্রথমে নোটিশ দিতে হবে। স্বামী যদি ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের কাছে বা মেয়রের কাছে অথবা স্বামী যদি সিটি কর্পোরেশনের এলাকার মধ্যে বসবাস করে সে ক্ষেত্রে মেয়রের কার্যালয়ে নোটিশ দিতে হবে।

 
এই সালিশি পরিষদের কাজ হবে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সমাধানতার চেষ্টা করে তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে স্বামী স্ত্রীকে পুনরায় সংসারে ফিরিয়ে আনার। সালিশি পরিষদ নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিন পর্যন্ত এই সমঝোতার চেষ্টা করবে। সেদিন থেকে শুরু করে ঠিক ৯০ দিনের পর গিয়ে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। সব সময় মনে রাখবেন, নোটিশ অবশ্যই দিতে হবে নোটিশ দেওয়া আইনে বাধ্যতামূলক।

এখন অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে নোটিশটি কিভাবে পাঠাবেন-আপনি ইচ্ছা করলে নোটিশ নিজে লিখে পাঠাতে পারেন অথবা কোন কাজের মাধ্যমে লিখে পাঠাতে পারেন। বা কাজী অফিসে ফরমেট পাওয়া যায় সে ফরমেট এর মাধ্যমে শূন্যস্থান পূরণ করে এবং তালাকের কারণ দিয়ে আপনি তালাকের নোটিশ পাঠাতে পারেন। 

আপনি চাইলে একজন ভালো আইনজির মাধ্যমে তালাকের নোটিশ পাঠাতে পারেন। সব সময় মনে রাখবেন যে আপনি যার মাধ্যমে তালাকের নোটিশ পাঠান না কেন নোটিশের প্রধান যে উপাদানগুলো রয়েছে এবং নোটিশের যে একটা ফরমেট রয়েছে সে ফরমেট অনুযায়ী এবং প্রধান উপাদান গুলি যেন অন্তর্ভুক্ত থাকে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

 দ্বিতীয় পদ্ধতিটি নিয়ে আলোচনা করব তাহলো খোলা তালাক-

খোলাতালাক সাধারণত সমঝোতার মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। খোলা তালাকের ক্ষেত্রে, স্ত্রী তার স্বামীকে বলে থাকে তাকে তালাক দেওয়ার জন্য। তার স্বামীর কাছ থেকে দেনমোহর বা মোহরানা নিবেন না। খোলা তালাকের ক্ষেত্রে স্ত্রী তার স্বামীকে মহোরানা বা দেনমোহর মাফ করে দেয়। বিশেষ করে এই পদ্ধতিতে খোলা তালাক দেয়া হয়ে থাকে। স্বামী যদি খোলা তালাক দেওয়ার জন্য রাজি হয় সে ক্ষেত্রে স্ত্রীকে কিন্তু তালাকের নোটিশ পাঠাতে হবে চেয়ারম্যান এর কাছে। আর নোটিশ পাঠানোর যে নিয়ম কারণগুলো রয়েছে আমি তা পূর্বেই আলোচনা করেছি।

তৃতীয় পদ্ধতিটি হলো আদালতের মাধ্যমে তালাক দেওয়া-

স্ত্রী যদি ইচ্ছা করে মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন ১৯৩৯ সালে যে কারন গুলো দেওয়া আছে সে আইনে, সে কারণগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি বা একাধিক কারণ দেখি আদালতের মাধ্যমে স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাইতে পারে।

 ১৯৩৯ আইনে যে সকল কারণ উল্লেখ রয়েছে তা নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • অনেকদিন বা চার বছর তার বেশি সময় ধরে স্বামীর যদি কোন খোঁজ খবর পাওয়া না যায় ।
  • দুই বছর ধরে স্বামী যদি কোন খোঁজ খবর না নেয় এবং স্বামী যদি দুই বছর ধরে তার ভরণপোষণ না দেয়
  • ১৯৬১ আইন ভঙ্গ করে ১ বা একের এর অধিক বিবাহ করলে।
  • স্বামী যদি কোন অপরাধের জন্য ৭ বছর ও ৭ বছরের বেশি মেয়াদের জন্য কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হলে।
  • কোন যুক্তি সঙ্গত কারণ ছাড়া স্বামী যদি তিন বছর ধরে বিবাহিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।
  • বিবাহ করার পর স্বামী যৌন অক্ষম হলে এবং এই অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে ।
  • দুই বছর ধরে স্বামী অপ্রকৃতস্থ রোগ সংক্রমক যৌন ব্যাধিতে ভোগলে।
  • স্ত্রীর প্রতি স্বামীর নিষ্ঠুর আচরণ করলে-স্বভাবগতভাবে তাকে শারীরিক নির্যাতন করলে, মারধর করলে স্ত্রীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তুললে।
উপরে উল্লেখিত কারণ গুলোর মধ্যে যে কোন একটি বা একাধিক কারণ দেখিয়ে কাবিননামায় তালাকের ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও স্ত্রী আদালতের মাধ্যমে তার স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারেন।

মেয়ে ডিভোর্স দিলে কি হয়

আমাদের দেশে প্রায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে দেনমোহর নিয়ে নানারকম বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়ে থাকে। বিভিন্ন রকম উদ্ভট ধারণা ও সমাজের অনেকের মধ্যে আছে।, স্ত্রী যদি স্বামীকে ডিভোর্স দেন , তখন স্বামীকে দেনমোহর বা মোহরানার টাকা পরিশোধ করতে হয় না। স্ত্রী যেহেতু নিজ ইচ্ছা থেকে এবং নিজ দায়িত্বে ডিভোর্স দিয়েছেন, তাই তাকে দেনমোহরের টাকা না দিলেও হবে এই ধারণা চরম ভুল। 


সবাইকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে স্বামী বা স্ত্রী যিনি ডিভোর্স দেন না কেন দেনমহোরের টাকা অবশ্যই স্ত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। দেনমোহর বিয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, ডিভোর্সের সঙ্গে নয়। প্রচলিত ইসলামিক আইন অনুযায়ী স্বামীকে দেনমোহর অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। কারণ দেনমোহর সব সময় স্বামীর ঋণ। বিয়ের পর স্ত্রী যদি স্বামীর কাছে দেনমোহর দাবি করার পর স্বামী উক্ত দাবি পরিষদ না করেন, স্ত্রী চাইলে স্বামীর কাছ থেকে আলাদা থাকতে পারেন এবং 

ওই অবস্থাতে স্বামী অবশ্যই তার ভরণপোষণ দিতে বাধ্য থাকবেন। যদি মৃত্যু হয়ে যায় বকেয়া দেনমোহর একটি ঋণের মতো এবং এটি শোধ করতেই হবে। স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামীর উত্তরাধিকারীরা এটা পরিশোধ করবেন। স্ত্রী যদি আগে মারা যান, তবুও দেনমোহর মাপ হবে না। স্ত্রীর উত্তরা এই দেনমোহরের দাবিদার । তারাও এটার উপরে মামলা করার ক্ষমতা রাখেন। কেননা দেনমোহর স্ত্রীর শুধু আইনত অধিকার নয়, এটা ধর্মীয় অধিকার। 

স্থানীয় সরকারের জজ পারিবারিক আদালতে সংক্রান্ত মামলা করা যায়।। ১৯৮৫ সাল থেকে এই আদালত পারিবারিক আদালত হিসেবে ডিভোর্সের তিন বছরের মধ্যে বা স্বামীর মৃত্যুর তিন বছরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে। অনেক সময় স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে আলাদা থাকার পর স্ত্রীকে স্বামী অনেক সময় নানা অজুহাতে দেনমোহরের টাকা দিতে চান না। ফলে স্ত্রী মামলা দায়ের করতে বাধ্য হন। মামলা করে মামলার জটিলতায় অনেক ক্ষেত্রে তাকে লম্বা ঘুরপাক খেতে হয়।

 ডিভোর্স বা আলাদা হওয়ার সময় যদি স্বামী স্ত্রীর দেনমোহর টাকা পরিশোধ করে দেন তাহলে তার স্ত্রীকে হয়রানীর  শিকার হতে হয় না। প্রত্যেক স্বামীর উচিত তাদের স্ত্রীর মোহরানার টাকা পরিশোধ করে দেওয়া। এছাড়া দেনমোহর নিয়ে সমাজে প্রচলিত একটি বিশেষ পরিচিত কথা হল, বিয়ের প্রথম রাতেই স্ত্রীকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করে দেনমোহর মাফ করিয়ে নেওয়া। বিয়ের রাতে যে কোন নারী মানসিকভাবে দুর্বল চিত্তে থাকেন। 

মহিলারা দেনমোহরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে অবগত থাকেন না এ কারণে স্বামী যদি দেনমোহর মাফ চান তখন লজ্জা থেকে না বলার মত অবস্থায় যেতে পারেন না। দেনমোহর নিয়ে এ ধরনের আশ্রয় নিতে পবিত্র কোরআনে ও ইসলামি জীবনধারায় কঠোরভাবে নিষেধ রয়েছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যদি কাবিন নামায় দেনমোহরের বিষয়ে স্থাবর অস্থাবরের কথা উল্লেখ না থাকে তাহলে স্ত্রীকে দেনমোহর হিসাবে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি দিলে তা দেনমোহর হিসেবে পরিষদ হবে না। 

সে ক্ষেত্রে দেনমোহর বাবদ কথাটি লেখা থাকতে হবে। স্বামী স্ত্রীকে কোন উপহার দিলে সেটি দেনমোহর বলে বিবেচিত হবে না। বিয়ের পর স্বামী স্ত্রীকে ভালোবেসে অনেক কিছু উপহার দিতে পারে। তবে স্বামী যদি স্ত্রীকে দেনমোহর হিসেবে কিছু দেয় তবে সেটা দেনমোহর বলে গণ্য হবে।

ডিভোর্স দিতে কি কি কাগজ লাগে

বিবাহ বিচ্ছেদ করার জন্য বা ডিভোর্স পেপার কিভাবে লিখতে হয় এবং বর্তমান সময়ে বিবাহ বিচ্ছেদ বা ডিভোর্স দেওয়ার আসল নিয়ম গুলো কি কি এর সংক্রান্ত তথ্য গুলো আমরা আজকের এই কন্টেন্টের মাধ্যমে আলোচনা করছি। কি আলোচনার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন ডিভোর্স পেপার লেখার নিয়ম এবং ডিভোর্স দিতে হলে কি কি লাগে বিদেশ থেকে ডিভোর্স দেওয়া যাবে কিনা ।

এ বিষয়গুলো জেনে নিতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনেক পরিমান বিবাহবিচ্ছেদ বা ডিভোর্স হচ্ছে। মূলত দুই পক্ষ থেকেই দেওয়া যায়। অনেকেই কাজী অফিসের মাধ্যমে বা কোর্টের মাধ্যমে ডিভোর্স দিয়ে থাকে। এটা সঠিক নিয়ম। তবে বিবাহবিচ্ছেদ পেপার বা ডিভোর্স পেপার কোথায় পাওয়া যাবে এ সম্পর্কে কেউ জানে না। তাই এখানে আমরা সঠিক নিয়মটি তুলে ধরেছি সম্পূর্ণ কনটেন্টটি পড়লে ভালোভাবে বুঝতে পারবে আপনারা।

তালাক দেওয়ার নিয়ম

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আগের তুলনায় বর্তমান সময়ে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় স্বামী স্ত্রী উভয়কেই ডিভোর্সের আশ্রয় নেওয়া লাগছে এবং নতুন দম্পতিদেরও। তারা একে অপরের সাথে থাকতে রাজি না হয় তালাক মাধ্যম বেশি নেওয়া লাগছে। তাই স্বামী স্ত্রী একে অপরের থেকে আলাদা থাকার জন্য মাধ্যমে তাদের বিচ্ছেদ সম্পন্ন করার প্রক্রিয়াকে ডিভোর্স বা তালাক বলা হয়। তালাক বললেই তালাক হয় না তালাক দেওয়ার জন্য কিছু নিয়ম ফলো করতে হয়।

এটি সময়ের ব্যাপার তাই আজকে আমরা কথা বলব ডিভোর্স পেপার লেখার নিয়ম এবং তালাক দেওয়ার সঠিক নিয়ম এবং ডিভোর্স দিতে কি কি লাগে এ বিষয় নিয়ে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তালাক দিতে হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট বিয়ের রেজিস্ট্রি শাখা থেকে অথবা কোর্টের মাধ্যমে তালাক প্রদান করতে হয়। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তালাক প্রদান করার কিছু নিয়ম রয়েছে। 

ডিভোর্স পেপার লেখার নিয়ম

বিবাহ কার্য সম্পন্ন করার জন্য যেমন রেজিস্ট্রেট লোকের প্রয়োজন হয়। তেমনি বিচ্ছেদের সময় বা তালাকের সময় সরকারের উকিল অথবা কাজী এর প্রয়োজন হয় ।। কেউ যদি তালাক দিতে চায় প্রথমে মুখে স্বীকারোক্তি দিয়ে তারপর কাগজের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি দিতে হবে। তাই যে বিষয়ে তালাক দিতে চান সে বিষয়ে কাগজে উল্লেখ থাকতে হবে।

এই বিষয়টি নোটিশ আকারে প্রদান করতে হবে। ডাকযোগে অথবা চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে অপরপক্ষকে পাঠাতে হবে। ডিভোর্স পেপার লেখার নিয়ম সম্পর্কে  বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে  হয়েছে সে অনুযায়ী আপনি ডিভোর্স পেপার লিখতে পারেন।

ডিভোর্স দিতে কি লাগে

প্রথমে আপনাকে কাগজের দেওয়া ফরমটি পূরণ করতে হবে এবং আপনি যে বিষয়ে তাকে ডিভোর্স দিবেন সেই বিষয়টি উল্লেখ করা লাগবে। অর্থাৎ আপনি কি উদ্দেশ্যে আপনার স্ত্রীকে ছাড়তে চাচ্ছেন অথবা আপনার স্বামীকে কি উদ্দেশ্যে ছাড়তে চাচ্ছেন সেই বিষয়টি ভালোমতো পেপারে উল্লেখ করা লাগবে। এবং পারিবারিকভাবে যদি কোন বৈঠক অথবা সালিশ হয়ে থাকে সেই বিষয়টি শেখানো উল্লেখ করা লাগবে। 

ডিভোর্স দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন আছে। আপনার পৌরসভার চেয়ারম্যান ,ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রশাসক বা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য সরকার নিয়োগ করার কোন ব্যক্তি এদের দ্বারা সালিশ নামা দেখানো লাগবে।

তালাকনামার যে ফর্মটি আছে সে ফর্মটি আপনার সমস্যার কথা উল্লেখ করে ভালোভাবে পূরণ করে সরকারি দায়িত্ব ব্যক্তির সিগনেচার নিয়ে আপনি আপনার পৌরসভার চেয়ারম্যান অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের হাতে নোটিশটি পাঠিয়ে দিবেন ।

 ৩০ দিনের মধ্যে স্বামী স্ত্রী উভয়কে নিয়ে পুনর্মিলনের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান সালিশি বৈঠক গঠন করবে। তারপরে যদি দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা না আসে তাহলে তালাক নোটিশটি ৯০ দিনের মধ্যেই কার্যকর হয়ে যাবে।। এ ৯০ দিনের মধ্যে যাবতীয় খরচ স্বামীকে দিতে হবে বাধ্যতামূলক ভাবে বলা হয়েছে। তারপরে সেটি বিয়ের রেজিস্ট্রির কাজির মাধ্যমে তালাক নিমন্ত্রণ করে নিতে হবে।

তালাক দেওয়ার নিয়ম

তালাক বা ডিভোর শুধু মুখে বললেই দেওয়া হয় না তালাক বা ডিভোর্স দেয়ার কিছু প্রসেস মানতে হয় কারণ, বিবাহ সম্পাদন করার ক্ষেত্রে যেমন যেমন সরকারি কিছু রীতি নীতি মেনে বিবাহ নিবন্ধন করতে হয় তেমনি তালাক বাটি বছর ক্ষেত্রে সরকারি কিছু নিয়ম অনুযায়ী কার্য সম্পাদন করতে হয়। না হলে এটা নিয়ে পরবর্তীতে হতে পারে তাই সরকারি উকিল অথবা নিকা নিবন্ধনকারী ব্যক্তির দ্বারা তালাক নিবন্ধন করতে হবে।

ডিভোর্স দিতে কত টাকা লাগে

ডিভোর্সের জন্য কত টাকা খরচ হয় বা কত টাকা লাগে। ডিভোর্স সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য। এ ধরনের কিছু তথ্য অনুসন্ধান করে এমন কিছু পাঠক যারা ডিভোর্স সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। যারা এ ধরনের তথ্য অনুসন্ধান করে থাকেন তাদের কথা চিন্তা করে আমরা আমাদের এই পোস্টটিতে বা প্রতিবেদনটিতে ডিভোর্স দিতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে চলেছি। 

এ বিষয়ে যাদের জানার আগ্রহ রয়েছে তারা উপস্থিত শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং দীর্ঘ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য গুলো আপনারা এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। যাই হোক কথা বাড়িয়ে লাভ নাই । বর্তমান সমাজে ডিভোর্স দেওয়া বা বিবাহ বিচ্ছেদ করা একটি সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ চাইলেই বিবাহ করতেছে এবং চাইলেই ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদ করছে।

তাই আমরা এই পোস্টটিতে তালাক দিতে কত টাকা লাগতে পারে এই তথ্য উপস্থাপন করতে চলেছি আপনাদের সুবিধার্থে। অনেকে চিন্তা করে থাকেন ডিভোর্স দিতে এত টাকা খরচ হয় কেন। অথবা অনেকে প্রশ্ন করেন যে ডিভোর্স দিতে কত টাকা লাগে এ ধরনের তথ্য গুলো যারা অনুসন্ধান করেন তারা এই থেকে সুন্দরভাবে জানতে পারবেন ডিভোর্স দেওয়ার খরচ সমূহ সম্পর্কে। তালাক দিতে হলে পরিশোধ করতে হবে। 
মনে রাখতে হবে দেনমোহর বা মহরানা স্ত্রীর প্রাপ্য একটি হক এক্ষেত্রে আপনি যখন বিয়ে করবেন তখন স্ত্রীকে অবশ্যই তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়ে বিয়ে করতে হবে। কিন্তু বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের বিষয়ের উপর নির্ভর করে দেনমোহর বেশি পরিমাণে নির্ধারণ করে থাকে। এর ফলে বরপক্ষ কোনোভাবে বিয়ের দেনমোহর  পরিশোধ করতে পারেনা । তাই আপনি যখন স্ত্রীকে তালাক দিতে যাবেন তাই সর্বপ্রথম আপনাকে এই দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। 

ডিভোর্স দেওয়ার আগে আপনার স্ত্রী যদি অন্তঃসত্ত্ব থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই সে সন্তান না হওয়া পর্যন্ত ডিভোর্স দেওয়া যাবে না। তাছাড়া মধ্যবর্তী যে তিন মাস সময় সমঝোতার জন্য আপনার কাছ থেকে নেওয়া হবে সেই সময় যদি সমস্যা সমাধান না হয় অথবা সমস্যার সমাধান হয় তাহলে মধ্যবর্তী সময় অবশ্যই স্ত্রী ভরন-পোষণ খরচ আপনাকে চালাতে হবে। 

উপরের এই খরচ ছাড়া আপনাকে আরো কিছু খরচ বহন করতে হবে। রেজিস্টার করার জন্য অথবা ডিভোর্সের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র সরকারের খাতা রেজিস্টার করার জন্য ৫০০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে। এছাড়া বিয়ের জন্য আপনার নকলনামা তোলার জন্য ৫০ টাকা খরচ বহন করতে হবে এছাড়া আরো কিছু টুকটাক খরচ আছে যেগুলো আপনাকে নিবন্ধন করার জন্য এবং প্রিন্ট করার জন্য লেখালেখি করার জন্য বহন করতে হবে।

ডিভোর্স নিয়ে উক্তি

আজকের এই পোস্টটি লেখার মাধ্যমে ডির্ভোস নিয়ে উক্তি তুলে ধরব। বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের মনোভাব তুলে ধরার চেষ্টা করে থাকেন, তাই আপনাদের মধ্যে যারা এ বিষয় নিয়ে স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, বা উক্তি, ছন্দ ইত্যাদি খোঁজ করে থাকেন তারা এই পোস্টে থাকা লেখাগুলো খুব সহজে সংগ্রহ করে নিতে পারেন। আশা করি এগুলো পাঠকের পছন্দ মত হবে এবং বিভিন্ন সময়ে ব্যবহারে গ্রহণযোগ্যতা হবে। উক্তিগুলো নিম্নরূপ-

  • বিবাহ বিচ্ছেদের উক্তি সমূ ওরে সর্বনাশ করেছে রেহ- যারা সাধারণ জীবন যাপন করে ডাল ভাত মোটা কাপড় এগুলো নিয়ে জীবন যাপন করার মানসিকতা রাখে তাদের কখনো ডিভোর্স হয় না।
  • বিয়ের আগে যে সম্পর্ক স্থাপন হয় সেটা থেকে যে ব্রেকআপ হয় সেটাকে বলে বিয়ের আগে এবং বিয়ের পরে যে সম্পর্ক ভেঙে যায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয় বিয়ের পরে। দুটা বিষয়ের পরিণতি একই তা হচ্ছে বিরহ।
  • আপনার ডিভোর্স হওয়ার আগে, অবদি অনেক মানুষ আপনার পাশে থাকবে কিন্তু ডিভোর্স হওয়ার পরে আপনার পাশে কেউ থাকবে না এটাই স্বাভাবিক।
  • জীবন আপনার,সংসার আপনার সিদ্ধান্ত আপনার, সকল যন্ত্রণার সহ্য না করে বরং বিচ্ছেদের পথ বেছে নিন।
  • তোমার কাছে একটাই কথা যে তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেও না, তুমি যেভাবে বলবে আমি ঠিক সেভাবেই থাকার চেষ্টা করবো তবুও এই বিচ্ছেদ আমি চাইনা।
  • আপনার প্রিয়জনকে কিভাবে বিদায় জানাবেন, যাকে ছাড়া আপনি বেঁচে থাকার কথা কল্পনাই করতে পারেন না, এমন মানুষের সাথে বিচ্ছেদের দুঃখ কিভাবে সহ্য করা যায়!
  • তবে প্রেম বিচ্ছেদের চেয়েও আরো শক্তিশালী, প্রেমের তুলনায় বিচ্ছেদ বেশি স্থায়ী হয়।

লেখকের মন্তব্য ও শেষ কথা

উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করেছি আজকের এই আর্টিকেল দ্বারা, ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে আপনাদের কাছে তুলে ধরার । আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেল যদি আপনাদের , ভালো লেগে থাকে , তাহলে অবশ্যই আপনার আত্মীয় পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করে নিতে পারেন।


























































এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url